কুরআন মাজিদের ৩৩ নম্বর সূরার ২১ নম্বর আয়াতের এর ভাষ্যানুযায়ী মুসলিম জাতি মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সাঃ) কে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আদর্শ হিসেবে ...
ফলে, আমি এখানে বাংলাদেশে প্রচলিত বাল্য বিবাহ নিরোধক আইন (১৯২৯) এর আলোকে শরীআ আইন কেন সঠিক ছিল তা তুলে ধরার চেষ্টা করব।
Why was Sharia Law right about child marriage?
বাল্য-বিবাহ সম্পর্কে শরীআ আইন কেন সঠিক ছিল?
হানাফী মাজহাবের আইনগ্রন্থ হিদায়াতে বিবাহযোগ্য পুরুষের বয়স নির্ধারণ করা হয়েছে ১২ এবং স্ত্রীলোকের ক্ষেত্রে ৯ বছর।
পক্ষান্তরে, ব্রিটিশ সরকার কর্তৃক প্রণীত The Child Marriage Act (1929) বা বাল্য বিবাহ নিরোধক অধ্যাদেশের ২ (ক) এ সাবালকত্বের বয়স নির্ধারণ করা হয়েছে যথাক্রমে পুরুষের ক্ষেত্রে ২১ ও মেয়েদের ক্ষেত্রে ১৮ বছর।
এছাড়া শরীআ আইন অনুসারে ২১ বছরের চাইতে কম বয়সী পুরুষ ও ১৮ বছরের চাইতে কম বয়সী নারীর বিবাহ বৈধ।
কিন্তু বাল্য বিবাহ নিরোধক আইনের ২ (খ) ধারা অনুসারে বর ও কনের যে কেউ একজন নাবালক হলে তাকে বাল্য বিবাহ বলা হবে। এমনকি বিবাহের এক পক্ষ সাবালক ও অপরপক্ষ নাবালক হলে বাল্যবিবাহের জন্য সাবালক পক্ষকে শাস্তি প্রদান করা হবে। অধিকন্তু, এই আইনের ৪ ধারা অনুযায়ী এই অপরাধের জন্য শাস্তি হচ্ছে ১ মাস পর্যন্ত বিনাশ্রম কারাদন্ড বা এক হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা অথবা উভয় প্রকার দন্ড।
৫ ধারায় বলা হয়েছে যে, যে ব্যক্তি নাবালকের বিবাহ সম্পন্ন করবে কিংবা পরিচালনা করবে কিংবা অনুষ্ঠানের নির্দেশ দিবে তাকেও সম পরিমাণ শাস্তি ভোগ করতে হবে।
পিতা, পিতামহ বা অন্যান্য অভিভাবকগণ যারা শরীআ আইন অনুযায়ী নাবালকের বিয়ে দিতে পারেন তারাও এ ক্ষমতা এই আইনের ৬ ধারা অনুযায়ী রহিত করা হয়েছে। সুতরাং বাল্য বিবাহের জন্য তারা দায়ী হলে অনুরুপ শাস্তি ভোগ করতে হবে। তবে, স্ত্রীলোকের কারাদন্ড দেওয়া যাবে না বলা হয়েছে।
এই আইনের ৯ ধারায় বলা হয়েছে যে, বিয়ে অনুষ্ঠানের ১ বছর অতিক্রান্ত হলে এতদসংক্রান্ত কোন অভিযোগ আদালতে দায়ের করা যাবে না। অর্থাৎ একবছর তামাদীকালের মধ্যে এই বিবাহ ভেঙ্গে দেওয়া যাবে।
বাল্য বিবাহ বন্ধের কুফল সমূহ
যৌতুক প্রথার প্রচলন
- একটি কিনলে আরেকটি ফ্রি;
- মূল্যছাড়;
- পূর্বের দামে অতিরিক্ত পণ্য, ইত্যাদি।
ধর্ষন, ব্যভিচারের প্রসারতা
ভ্রণ হত্যা প্রবণতা
যদিও বাংলাদেশে ১৮৬০ সালের দন্ডবিধি আইনের ৩১২-৩১৮ ধারার মাধ্যমে গর্ভপাত নিশিদ্ধ করা হয়, তবে নারীর জীবন বাঁচাতে বৈধ। এছাড়াও ১৯৭২ সালের অর্ডিন্যান্স অনুযায়ী মুক্তিযুদ্ধের সময় ধর্ষিতা নারীদের জন্য গর্ভপাত করা বৈধ করা হয়েছে। এ আইনে আরোও বলা হয়েছে যে, গর্ভধারণের ৮ সপ্তাহ পর্যন্ত (Abortion) বা গর্ভপাত করা বৈধ।
বিবাহ বিচ্ছেদের হার বৃদ্ধি
মহানবী (সাঃ) হাদিছে বলেছেন যে, “খুলিকাত মিন দ্বিলাইন” অর্থাৎ নারীরা বাকা অস্থি বা হাড় দ্বার সৃষ্ট। সুতরাং এদেরকে অল্প বয়স হতে স্বামীর আনুগত্যে নিয়ে আসতে হবে। কারণ, বেশি বয়ষ্ক নারীরা স্বামীর আনুগত্যে কখনো আসতে চাই না। ফলে, তাদের দাম্পত্য জীবনে কলহের সৃষ্টি হয়। অবশেষে, মনোমালিন্য বিবাহ বিচ্ছেদে রুপান্তরিত হয়।
তার বাস্তব প্রমাণ বাংলাদেশের পরিসংখ্যান ব্যূরোর প্রতিবেদন অনুযায়ী দেশে ২৫ থেকে ২৯ বছর বয়সীদের মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদের হার বেশি। এছাড়াও প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, যেখানে ২০০৬ সালে বাংলাদেশে বিবাহ বিচ্ছেদের মোট হার ছিল দশমিক ৬ তা এখন বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ১ দশমিক এক।
উপরোক্ত আলোচনা থেকে সহজেই বোঝা যায় যে, আধুনিক আইন সমূহ বাহ্যতঃ যতই দৃষ্টিনন্দন মনে হোক না কেন উহার বাস্তবতা ততোধিক খারাপ।
COMMENTS