মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য নির্বাচনে, প্রার্থীরা Popular ভোটের মাধ্যমে সরাসরি নির্বাচিত হন। তবে রাষ্ট্রপতি এবং উপ-রাষ্ট্রপতি সরাসরি নাগ...
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য নির্বাচনে, প্রার্থীরা Popular ভোটের মাধ্যমে সরাসরি নির্বাচিত হন। তবে রাষ্ট্রপতি এবং উপ-রাষ্ট্রপতি সরাসরি নাগরিক দ্বারা নির্বাচিত হন না; বরং তারা Electoral College নামে পরিচিত একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে "নির্বাচক" দ্বারা নির্বাচিত হয়ে থাকেন।
নিম্নে আমি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রাষ্ট্রপতি কিভাবে নির্বাচিত হয় তা সবিস্তারে আলোচনা করব। আশা করি আপনি উপকৃত হবেন।
How is the President elected in the US?
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রাষ্ট্রপতি কিভাবে নির্বাচিত হয়?
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান অনুযায়ী প্রেসিডেন্ট একটি নির্বাচক মন্ডলী কর্তৃক পরোক্ষভাবে নির্বাচিত হন। প্রত্যেকটি অঙ্গরাজ্য রাষ্ট্রপতি ও উপ-রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য কংগ্রেসে ঐ রাজ্যের প্রতিনিধির সমান সংখ্যক নির্বাচক নির্বাচন করে। এই নির্বাচকগণ নিজ নিজ রাজ্যে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য ভোট প্রদান করেন। মোট ৫৩৮ টি Electoral Votes বা নির্বাচনী ভোট রয়েছে, যে প্রার্থী অর্ধেকেরও বেশি (২৭০) ভোট পান তিনি নির্বাচনে জয়ী হন।
সর্বাধিক ভোট প্রাপ্ত প্রার্থীদের উপর হতে ৩ জনের মধ্যে কংগ্রেসের প্রতিনিধি সভা প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করে। কিন্তু বর্তমান বাস্তব অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে প্রেসিডেন্ট প্রায় প্রত্যক্ষ হয়ে গেছে। নির্বাচনকগণ সকলেই দলীয় ভিত্তিতে নির্বাচিত হন এবং তারা দলীয় প্রার্থীকে সমর্থন করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকেন।
প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীর জন্য বয়স কমপক্ষে ৩৫ বছর হতে হবে এবং জন্মসূত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক হতে হবে। সে দেশের শুধু নাগরিক হলেই চলবে না, অন্তত ১৪ বছর সেখানে বসবাস করতে হবে। ৪ বছরের জন্য নির্বাচিত হন। ১৯৫৩ সালের সংবিধান সংশোধনের পর এক ব্যক্তি দু’বারের বেশি প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচিত হতে পারবেন না।
মার্কিন প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা ও কার্যাবলী
মার্কিন প্রেসিডেন্ট শুধু রাষ্ট্রপ্রধান নয়, সরকার প্রধানও বটে। সেজন্য সে দেশের প্রেসিডেন্ট অসাধারণ ক্ষমতার অধিকারী। মূলতঃ মার্কিন প্রেসিডেন্টকে শাসনকার্য পরিচালনা করতে হয়। এছাড়াও আইন সংক্রান্ত ও বিচার সংক্রান্তু কিছু ক্ষমতাও তার রয়েছে।
শাসন সংক্রান্ত্রঃ সংবিধান, কংগ্রেস প্রণীত আইন, বিচার বিভাগের রায় ও নির্দেশ এবং পররাষ্ট্রসমূহের সহিত সম্পাদিত চুক্তি ও সন্ধির বাস্তবায়ন ও কার্যকরী করাই হচ্ছে মার্কিন প্রেসিডেন্টের সর্ব প্রধান কাজ। এই উদ্দেশ্যে সরকারের সকল উচ্চপদস্থ কর্মচারী ও বিভিন্ন সচিবদের তিনিই নিয়োগদান করেন। বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও সুপ্রীম কোর্টের বিচারপতিদের নিয়োগ করারও তার কাজ।
এছাড়া মন্ত্রীদের তিনি নিয়োগ দেন যারা তাদের কাজের জন্য প্রেসিডেন্টের নিকট দায়ী থাকেন। তিনি সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক। তবে কংগ্রেসের উভয় কক্ষের সম্মতি ব্যতীত তিনি যুদ্ধ ঘোষণা করতে পারেন না।
আইন সংক্রান্তঃ ক্ষমতা পৃথকীকরণ নীতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বেশি প্রয়োগ হয়। বিধায় সেখানে স্বভাবতঃ প্রেসিডেন্টের আইন সংক্রান্ত ক্ষমতা প্রত্যক্ষ প্রতিফলন দেখা যায় না। তিনি আইন সভার সাধারণ অধিবেশন আহ্বান, স্থগিত বা সমাপ্তি ঘোষণা করতে পারেন না, কিন্তু তিনি এর বিশেষ অধিবেশন আহ্বান করতে এবং বাণীর মাধ্যমে বিভিন্ন পরামর্শ দিতে পারেন।
কংগ্রেসের পাস করা বিলে তিনি স্বাক্ষর দান করেন। এ সকল বিলে সম্মতি না দিয়ে তিনি সাময়িকভাবে স্থগিত রাখতে পারেন। তবে দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য দ্বারা পুনরায় তা সমর্থিত হলে তিনি তাতে স্বাক্ষর করতে বাধ্য থাকেন। কিন্তু রাষ্ট্রপতি যে বিলের উপর স্থগিতমূলক ভেটো প্রয়োগ করে থাকেন সেই বিল পুনরায় কংগ্রেসে উত্থাপিত হবার পূর্বেই যদি কংগ্রেসের অধিবেশন শেষ হয়ে যায় তাহলে রাষ্ট্রপতির ভেটো কার্যকরী থাকে এবং বিলটির মৃত্যূ ঘটে।
বিচার সংক্রান্তঃ যে কোন আদালত হতে দন্ডাজ্ঞা প্রাপ্ত অপরাধীকে রাষ্ট্রপতি ক্ষমা করতে পারেন। কিন্তু রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপের জন্য দন্ডণীয় ব্যক্তির এবং উচ্চপদস্থ সরকারী কর্মচারীদের বিরুদ্ধে যদি ইমপিচমেন্ট আনা হয়, তাহলে তিনি তাদেরকে ক্ষমা প্রদর্শন করতে পারেন না।
রাষ্ট্রপতির অভিশংসনঃ মার্কিন প্রেসিডেন্টকে স্বাভাবিক অবস্থায় পদচ্যূত করা যায় না। তবে তিনি শাসনতন্ত্র লংঘন, দেশদ্রোহিতা, উৎকোচ গ্রহণ এবং অন্যান্য দুর্নীতিমূলক আচরণের অভিযোগে অপরাধী প্রমাণিত হলে অভিশংসনের মাধ্যমে তাকে পদচ্যূত করা যায়। সাধারণতঃ প্রতিনিধির সভায় অভিশংসন প্রস্তাব উত্থাপিত হয় এবং সিনেট এর বিচার করে থাকেন। সুপ্রীম কোর্টের প্রধান বিচারপতির সভাপতিত্বে এ বিচারকার্য সম্পন্ন করা হয়। যদি সিনেটের উপস্থিত সদস্যগণের দুই-তৃতীয়াংশ এই অভিযোগ সমর্থন করেন, তবেই রাষ্ট্রপতিকে পদচ্যূত করা যায়।
COMMENTS