আপনি দৈনিক কত ঘন্টা সময় কাজ করতে পারবেন তা বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ উল্লেখ করা হয়েছে। তবে, এই আইন কেবল শ্রমিকদের জন্য প্রযোজ্য। শ্রম আইনের ২...
আপনি দৈনিক কত ঘন্টা সময় কাজ করতে পারবেন তা বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ উল্লেখ করা হয়েছে। তবে, এই আইন কেবল শ্রমিকদের জন্য প্রযোজ্য। শ্রম আইনের ২(৬৫) ধারাতে একজন শ্রমিকের সংজ্ঞা প্রদান করে বলা হয়েছেঃ
অর্থাৎ 'শ্রমিক' অর্থ কোনও প্রতিষ্ঠানের বা শিল্পে নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষানবিশসহ যে কোনও ব্যক্তি প্রত্যক্ষভাবে বা ঠিকাদারের মাধ্যমে ভাড়াটে বা পুরষ্কারের জন্য যে কোনও দক্ষ, অদক্ষ, ম্যানুয়াল, প্রযুক্তিগত, বাণিজ্য প্রচারমূলক বা ক্লারিকাল কাজ করা, চাকরীর শর্তাদি হোক না কেন প্রকাশিত বা নিহিত, তবে প্রধানত পরিচালনামূলক বা প্রশাসনিক ক্ষমতাতে নিযুক্ত কোনও ব্যক্তি অন্তর্ভুক্ত নয়;
ফলে, আমি এখানে শ্রমিকের কর্ম ঘন্টা নিয়ে আলোচনা করব। আশা করি আপনি উপকৃত হবেন।
How many hours a worker can work daily?
একজন শ্রমিক দৈনিক কত ঘন্টা কাজ করতে পারেন?
বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ কেবল একজন শ্রমিকের দৈনিক কর্ম ঘন্টায় নির্ধারণ করেনি; বরং কোন প্রতিষ্ঠানের প্রাপ্তবয়স্ক শ্রমিকদেরকে কাজের সময় সংক্রান্ত নোটিশ দেয়া উচিত কিনা সে প্রসঙ্গে বলা যায় যে এ ব্যপারে আইনের নির্দেশ রয়েছে।
১১১(১) ধারাতে বলা হয়েছে যে, প্রত্যেক প্রতিষ্ঠান এতে কর্মরত প্রাপ্ত বয়স্ক শ্রমিকগণ কোন কোন সময় কাজ করবেন তা পরিষ্কারভাবে লিখে একটি নোটিশ ধারা ৩৩৭ এর বিধান অনুযায়ী প্রদর্শিত হবে এবং প্রতিষ্ঠানে তা যথাযথভাবে রক্ষিত হবে।
ধারা ৩৩৭(১) এ বলা হয়েছে যে, প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানের মালিক এর বার এর কোন কর্মস্থলের প্রধান প্রবেশ পথে অথবা এর নিকট কোন প্রকাশ্য জায়গায় বা যাতায়াতগম্য স্থানে এই আইন এবং বিধি ও প্রবিধানের জরুরি বা গুরুত্বপূর্ণ বিধানসমূহের সারসংক্ষেপ সম্বলিত একটি নোটিশ লটকিয়ে দিবেন।
১১৩ ধারাতে বিধান রয়েছে যে, ধারা ১১১(১) এর অধীন নোটিশ এবং ধারা ৯ এর অধীন রক্ষিত রেজিস্টারে কোন প্রাপ্তবয়স্ক শ্রমিকের নামের বিপরীতে পূর্ব লিপিবদ্ধ বিবরণ অনুযায়ী ব্যতীত তিনি কোন কাজ করতে পারবেন না।
৯ ধারাতে বিধান করা হয়েছে, প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানে মালিক তার প্রতিষ্ঠানে কর্মরত সকল শ্রমিকের জন্য একটি শ্রমিক রেজিষ্টার রাখবেন এবং এতে প্রত্যেক শ্রমিকের নাম, জন্ম তারিখ, নিয়োগের তারিখ, কাজের ধরণ, নির্ধারিত কার্য সময়, বিশ্রামের সময় ইত্যাদি বিবরণ লিপিবদ্ধ থাকবে।
বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ এর ১০০ ধারাতে বলা হয়েছেঃ
অর্থাৎ একজন প্রাপ্তবয়স্ক শ্রমিক সাধারণতঃ দৈনিক ৮ ঘন্টা সময় কাজ করবেন। তবে, ১০৮ ধারাতে যে অতিরিক্ত ভাতা প্রদানের বিধান রয়েছে সেটা সাপেক্ষে দৈনিক ১০ ঘন্টা পর্যন্ত কাজ করতে পারবেন।
১০৮(১) ধারাতে বলা হয়েছে যে, যে ক্ষেত্রে কোন শ্রমিক কোন প্রতিষ্ঠানে কোন দিন বা সপ্তাহে এই আইনের অধীন নির্দিষ্ট সময়ের অতিরিক্ত সময় কাজ করেন, সেক্ষেত্রে মহার্ঘভাতা এবং এ্যাডহক বা অন্তর্বর্তী মজুরী, যদি থাকে, এর সাধারণ হারের দ্বিগুণ হারে ভ্রাতা পাবেন। কিন্তু যদি উল্লেখিত হারে ভাতা দেওয়া না হয়, তবে সে শ্রমিক প্রাপ্যভাতার জন্য দাবী করতে পারবে।
উদাহরণঃ
‘ক’ একজন শ্রমিক। সে দরিদ্রতার জন্য নির্ধারিত সময়ের অতিরিক্ত সময় কাজ করে। কিন্তু মালিক তাকে অতিরিক্ত কাজের জন্য বেতনের হার অনুযায়ী একই হারে ভাতা প্রদান করে। এক্ষেত্রে ‘ক’ মালিকের নিকট বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ এর ১০৮(১) ধারা অনুসারে দ্বিগুণ হারে ভাতা দাবী করতে পারবেন।
COMMENTS