মুসলিম আইন অনুযায়ী বিবাহ হচ্ছে একজন পুরুষ ও একজন নারীর মধ্যে সম্পাদিত একটি চুক্তি যদ্বারা উভয়ের মধ্যে সম্ভোগ ও সন্তান লাভ চিরস্থায়ীভাবে বৈধক...
মুসলিম আইন অনুযায়ী বিবাহ হচ্ছে একজন পুরুষ ও একজন নারীর মধ্যে সম্পাদিত একটি চুক্তি যদ্বারা উভয়ের মধ্যে সম্ভোগ ও সন্তান লাভ চিরস্থায়ীভাবে বৈধকরণ করা হয়। ইসলামী আইনে বিয়ে অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের মতে কেবল ধর্মীয় সংষ্কার নয়; বরং এটা একটি পবিত্র বন্ধন। ফলে, মুসলমান নারী-পুরুষের (Interfaith Marriage) বা আন্তঃধর্মীয় বিবাহের ব্যপারে কিছু আইনী বাধা নিষেধ আছে।
ফলে, আমি এখানে আন্তঃধর্মীয় বিবাহ সম্পর্কে আলোচনা করব। আশা করি আপনার সন্দেহ দূর হবে।
Is it haram to marry a non-Muslim?
অমুসলিমকে বিয়ে করা কি হারাম?
একজন মুসলমান পুরুষ, মুসলমান নারী ভিন্ন কেবল আহলে কিতাব তথা ইহুদি ও খ্রিষ্টান নারীকে বিয়ে করতে পারে। (সূরা মায়িদা, আয়াতঃ ৫)। ফলে, যদি কোন মুসলমান দম্পতির স্ত্রী খ্রিষ্টান ধর্ম গ্রহণ করে, তবে তাদের বিয়ে বৈধ থাকবে। কেণনা, খ্রিষ্টানরা কিতাবিয়া। একজন মুসলমান পুরুষ একজন কিতাবিয়া মহিলাকে বিয়ে করতে পারে। এ ব্যপারে কুরআন মাজিদে অনুমতি রয়েছে। [১৫ ডি. এল. আর. (এস. সি.) ৯]
পক্ষান্তরে, একজন মুসলমান পুরুষ কোন Pagan Woman বা পৌত্তলিক নারীকে বিয়ে করতে পারবে না। পৌত্তলিক বলতে হিন্দু, শিখ, ঈসায়ী, বৌদ্ধ ইত্যাদি ধর্মাবলম্বী নারীকে বিবাহ করতে পারবে না (সূরা বাকারা, আয়াতঃ ২২১/সূরা মুমতাহিনা, আয়াতঃ ১০)। তবে, কোন হিন্দু দম্পতির স্বামী ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে মুসলমান হলে তিনি তার স্ত্রীকেও ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করতে আহ্বান জানাতে পারেন। তিনি এতে সাড়া না দিলে বিয়ে বাতিল হয়ে যাবে না। তবে ঐ হিন্দু স্ত্রী স্বামীর সম্পত্তির উত্তরাধিকার হতে বঞ্চিত হবে।
অন্যদিকে, একজন মুসলিম মহিলা অ-মুসলিমকে বিয়ে করলে তা বৈধ হবে না। এমনকি কোন আহলে কিতাবী তথা ইহুদী ও খ্রিষ্টান পুরুষের সাথেও বৈধ বিয়েতে আবদ্ধ হতে পারে না।
ফলে, কোন মুসলিম মহিলা একজন অমুসলিমকে বিয়ে করলে তা বৈধ হবে না। যদি কেউ এরুপ বিয়ে করে ফেলে, তবে তা সম্পূর্ণভাবে অবৈধ নয়; বরং ইহা Irregular Marriage অনিয়মিত বা ফাসিদ বিয়ে। ফাসিদ বা অনিয়মিত বিয়ে বলতে যে বিয়ে ইসলামী আইনের সকল শর্ত পূরণ করেনি, কিন্তু অবৈধ বা বাতিল নয়। আর ফাসিদ বিয়ের কারণ সমূহের মধ্যে ধর্মের পার্থক্য অন্যতম। আর এ বিয়ের আইনগত ফলাফল হবে নিম্নরুপঃ
(১) সহবাসের পূর্বে বা পরে, যে কোন সময়ে যে কোন পক্ষ মৌখিক ভাবেই বিয়েটির পরিসমাপ্তি ঘটাতে পারে।
(২) সহবাসের পরে,
- স্ত্রী দেনমোহরের অধিকারিণী হবে, তবে নির্দিষ্ট ও যথাযথ মোহরানার মধ্যে যেটি কম সেটি পাবেন।
- স্ত্রী ইদ্দত পালন করতে বাধ্য থাকবেন তবে বিয়ে বিচ্ছেদ বা স্বামীর মৃত্যূ হলে এই ইদ্দতের মেয়াদ থাকবে তিনটি ঋতুকাল।
- এরুপ বিয়ের সন্তান-সন্ততি বৈধ হবে এবং পিতা-মাতার সম্পত্তির উত্তরাধিকার হবে, তবে স্বামী ও স্ত্রী পরস্পরের সম্পত্তির উত্তরাধিকার হবে না।
COMMENTS