যখন অন্যায়কারীর কার্য এরুপ প্রকৃতির যে এতে শুধু অপরের অধিকার লংঘিত হয় না বরং কার্যটি এমন দূষণীয় যে, এর জন্য শাস্তির বিধান রয়েছে তখন অন্যায়কা...
যখন অন্যায়কারীর কার্য এরুপ প্রকৃতির যে এতে শুধু অপরের অধিকার লংঘিত হয় না বরং কার্যটি এমন দূষণীয় যে, এর জন্য শাস্তির বিধান রয়েছে তখন অন্যায়কারীর ফৌজদারী দায়ের উদ্ভব ঘটে। তবে, কিছু কিছু ক্ষেত্রে ফৌজদারী দায় এড়ানোর অজুহাত থাকে।
নিম্নে আমি যে সব অজুহাতের কারণে ফৌজদারী দায় হতে অব্যাহতি পাওয়া যেতে পারে তা নিয়ে আলোচনা করব। আশা করি আপনি উপকৃত হবেন।
The general grounds for exemption from criminal liability
ফৌজদারি দায় থেকে অব্যাহতির সাধারণ অজুহাত সমূহ
দায় বলতে অন্যায়ের প্রতিফলকে বুঝায়। প্রত্যেক ব্যক্তি তার অন্যায় কাজের জন্য জবাবদিহী করতে বাধ্য থাকে। ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনে প্রত্যেক ব্যক্তির উপর কোন না কোন দায়িত্ব ন্যস্ত। এই দায়িত্ব ইতিবাচক হতে পারে বা নেতিবাচক হতে পারে। যে কাজ করা উচিত নয় সে কাজ করলে ইতিবাচক দায়িত্বের লংঘন এবং যে কাজ করা উচিৎ সে কাজ করতে ব্যর্থ হলে নেতিবাচক দায়িত্বের উদ্ভব ঘটে, কেননা এরুপ আচরণ আইন প্রত্যাশা করে না।
অতএব, যে প্রক্রিয়া দ্বারা এক ব্যক্তি অন্য ব্যক্তির আচরণের উপর প্রভাব বিস্তার করে তাকেই দায় বা দায়িত্ব বলে। নিম্নোক্ত কারণে ফৌজদারী দায় হতে অব্যহতি পাওয়া যায়ঃ
অনিবার্য দুর্ঘটনা
যে ক্ষেত্রে যথাসাধ্য চেষ্টা ও যুক্তিসঙ্গত সাবধানতা অবলম্বন করা সত্ত্বেও দুর্ঘটনা এড়ানো বা রোধ করা সম্ভব হয় না সেক্ষেত্রে তাকে অনিবার্য দুর্ঘটনা বলে। অসতর্কতার কারণে দুর্ঘটনা ঘটলে তাকে অনিবার্য দুর্ঘটনা বলা যায় না, তা হচ্ছে দূষণীয় দুর্ঘটনা এবং এর জন্য দায় মুক্তি হয় না। অনিবার্য ঘটনা ঘটলে দেওয়ানী ও ফৌজদারী উভয় দায় হতে অব্যাহতি পাওয়া যেতে পারে।
আত্মরক্ষা
নিজের শরীর বা সম্পদ আক্রমনের হাত হতে রক্ষার জন্য এমন কোন কাজ করতে হয় সাধারণ অবস্থায় অপরাধমূলক হিসেবে গণ্য হবে না অর্থাৎ ফৌজদারী দায় হতে সে অব্যাহতি পাবে।
অপ্রাপ্ত বয়স্ক
অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছেলেমেয়েদের অপরাধ করার মত দোষী মন থাকে না বলে সাধারণত ধরে নেয়া হয়। তাই প্রত্যেক দেশেই অল্পবয়স্ক ছেলেমেয়েদেরকে ফৌজদারী দায় হতে অব্যহতি দেয়ার বিধান রাখা হয়েছে। বাংলাদেশে প্রযোজ্য দন্ডবিধির ৮২ ধারায় বলা হয়েছে যে, ৭ বছরের কম বয়স্ক কোন ছেলে বা মেয়েকে অপরাধী করা যাবে না এবং ৮৩ ধারায় বলা হয়েছে যে ৭ বছরের অধিক কিন্তু ১২ বছরের কম বয়স্ক অপরিণত বোধ সম্পন্ন শিশুর কোন কার্যই অপরাধ বলে গণ্য হবে না।
তথ্যগত ভূল
আইনতঃ কোন কাজ করতে গিয়ে ভূলের বশবর্তী হয়ে অন্য কাজ করলে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে না। তাই আদালতের নির্দেশে ‘ক’, ‘খ’ কে গ্রেপ্তার করতে গিয়ে যথাযথ অনুসন্ধান করেও ‘গ’ কে ভূল করে ‘খ’ মনে করে গ্রেপ্তার করলে ‘ক’ অপরাধ করেনি বলে গণ্য হবে। এটা তথ্যগত ভূল। তবে আইনগত ভূলের জন্য কোন অব্যহতি পাওয়া যায় না। কেণনা, ধরে নেয়া হয় যে, প্রত্যেকেই অন্ততঃ তার নিজ দেশের আইন জানে। তাই বলা হয় যে, "Ignorance of law no excuse".
COMMENTS