সাধারণভাবে বলতে গেলে, মানুষের ব্যক্তিত্বের অস্তিত্ব জন্মের সময় থেকেই শুরু হয় এবং মৃত্যুর সাথে সাথে তার অস্তিত্বের অবসান ঘটে। ফলে, মৃত ব্যক...
সাধারণভাবে বলতে গেলে, মানুষের ব্যক্তিত্বের অস্তিত্ব জন্মের সময় থেকেই শুরু হয় এবং মৃত্যুর সাথে সাথে তার অস্তিত্বের অবসান ঘটে। ফলে, মৃত ব্যক্তিদের আইনের দৃষ্টিতে ব্যক্তি হিসাবে বিবেচনা করা হয় না। তাই তারা নিজেরা মামলা করতে পারে না এবং তাদের বিরুদ্ধে মামলাও করা যাবে না। তবে, আইনের দৃষ্টিতে কিছু মর্যদা রয়েছে।
আমি নিম্নে মৃত ব্যক্তির আইনী মর্যদা সম্পর্কে আলোচনা করব। আশা করি আপনি উপকৃত হবেন।
What is the legal status of a dead man?
মৃত ব্যক্তির আইনী অবস্থান কী?
মানুষের মৃত্যূর সাথে তার অধিকার ও কর্তব্যের পরিসমাত্তি ঘটে। তাই মৃত ব্যক্তিকে কোন পর্যায়ভূক্ত করা যায় না।
এতদসত্ত্বেও বিখ্যাত আইনবিদ স্যামন্ডের মতে, নিম্নবর্ণিত তিনটি ক্ষেত্রে মৃত ব্যক্তি আইনানুযায়ী মর্যদার অধিকারী। কেণনা, মানুষ জীবিত কালেই মরণোত্তরকালের উক্ত বিষয় সম্পর্কে উদ্বিগ্ন থাকে। এগুলি হলো-
- তার মৃতদেহ (His body);
- তার সুনাম (His reputation); ও
- তার পরিত্যক্ত সম্পত্তি (His estate)।
মৃতদেহ
মৃতদেহ কারো সম্পত্তি নয় এবং হস্তান্তর করা যায় না। মৃতদেহের সৎকার ও অন্তেষ্টিক্রিয়ার অধিকার ফৌজদারী আইনে স্বীকৃত রয়েছে।
মৃত ব্যক্তির কবর বা সমাধি বা স্মৃতিসৌধ অপবিত্র করা ফৌজদারী আইনে দন্ডনীয় অপরাধ। কবরস্থান বা সমাধি সংরক্ষণের জন্য হিন্দু-মুসলমান উভয় সম্প্রদায়ের আইনে ট্রাষ্টি সৃষ্টি করার বৈধতা স্বাীকার করা হয়েছে এবং তা ১৮৮২ সালের সম্পত্তি হস্তান্তর আইনের বিধানমতে ‘চিরস্থায়ী নীতির পরিপন্থী’ বলে গণ্য হবে না।
ইংল্যান্ডের আইন অনুসারে মৃত ব্যক্তির কবর সংরক্ষণের জন্য ট্রাস্ট করা বৈধ নয় এবং মৃত ব্যক্তিকে খৃষ্টান কবরস্থানে সমাধিস্থ করতে হবে। বাংলাদেশের আইন অনুসারে, মৃত ব্যক্তির অন্তিম ইচ্ছা অনুসারে তাকে যে কোন স্থানে সমাধিস্থ করা যাবে।
সুনাম
মৃত ব্যক্তির সুনাম, যশ, বা খ্যাতি দেওয়ানী আইনে সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকলেও ফৌজদারী আইনে সংরক্ষিত হয়। ১৮৬০ সালে প্রণীত দন্ডবিধি অনুযায়ী মৃত ব্যক্তির চরিত্রের উপর কুটুক্তি করা বা কু্ৎসা রটনা করা মানহানির সামিল এবং তা মৃত ব্যক্তির আত্মীয়-স্বজনদের অনুভূতিতে আঘাত দেয় ও সমাজে হেয় প্রতিপন্ন হতে হয়। তাই ফৌজদারী আইন অনুযায়ী এগুলি দন্ডনীয় অপরাধ।
সম্পত্তি
মৃত ব্যক্তির পরিত্যক্ত সম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণ ও বিলি-বন্টনের ব্যবস্থা আইনে রয়েছে। এ সম্পর্কে মৃত ব্যক্তির কোন নির্দেশ থাকলে তা কার্যকর করারও বিধান রয়েছে। তবে মুসলিম আইনে উত্তরাধিকারীগণের অনুমতি ব্যতীত কেউ তার সম্পত্তির এক-তৃতীয়াংশের (১/৩) বেশি উইল বা মরণোত্তর দান করতে পারেন না।
COMMENTS