বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন আধা-বিচারিক সাংবিধানিক সংস্থা এবং জাতীয় অখণ্ডতার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ। স্বচ্ছ ও জবাবদিহি পরিচালনা প্রতি...
বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন আধা-বিচারিক সাংবিধানিক সংস্থা এবং জাতীয় অখণ্ডতার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ। স্বচ্ছ ও জবাবদিহি পরিচালনা প্রতিষ্ঠা ও প্রচারে এর অনন্য ভূমিকা রয়েছে। বাংলাদেশ সংবিধানের ১৩৭-১৪১ অনুচ্ছেদে বাংলাদেশ কর্ম কমিশনকে প্রদত্ত দায়িত্ব সম্পর্কে উল্লেখ করা হয়েছে।
নিম্নে আমি বাংলাদেশ কর্ম কমিশনের গঠন ও কার্যাবলী সম্পর্কে আলোচনা করব। আশা করি আপনি উপকৃত হবেন।
Formation and functions of Bangladesh PSC
বাংলাদেশ সরকারী কর্ম কমিশনের গঠন ও কার্যাবলী
আধুনিক যুগে জনগণ কর্তৃক প্রতিনিধিগণ বা ব্যক্তি বিশেষ নির্দষ্ট সময়ের জন্য সরকার পরিচালনা করেন। তারা কোন বিশেষ রাজনৈতিক দলের বা কতিপয় দলের সদস্য হতে পারে বা স্বতন্ত্র হতে পারে। তারা নীতি নির্ধারণ ও আইন প্রণয়ন করেন, কিন্তু তা বাস্তবায়ন করেন সরকারী কর্মচারীগণ। যারা স্থানীয়ভাবে কর্মে নিযুক্ত থাকেন এবং রাজনৈতিক দলের প্রভাবমুক্ত হয়ে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করেন। তাই সরকারের সাফল্য অনেকাংশে নির্ভর করে সরকারী কর্মচারীদের উপর। নিরপক্ষভাবে দক্ষ ও উপুক্ত অসামরিক কর্মচারী নিয়োগের জন্য প্রায় প্রত্যেক দেশেই একটি স্বতন্ত্র সংস্থা থাকে, যা সরকারের প্রভাবমুক্ত। এই সংস্থার নাম কর্ম কমিশন বা পাবলিক সার্ভিস কমিশন। বাংলাদেশ সংবিধানের ১৩৭ অনুচ্ছেদে বাংলাদেশের জন্য এক বা একাধিকর কর্ম কমিশন প্রতিষ্ঠার বিধান করা হয়েছে।
সরকারী কর্ম কমিশনের গঠন ও কার্যাবলী নিম্নরুপঃ
কর্ম কমিশন গঠন
একজন সভাপতি ও আইনের দ্বারা যেরুপ নির্ধারিত হবে সেরুপ সংখ্যক সদস্য নিয়ে প্রত্যেক কর্ম কমিশন গঠিত হবে। এরা সকলেই রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিযুক্ত হবেন। এদের কর্মের শর্তাবলী রাষ্ট্রপতি নির্ধারণ করবেন (১৩৮ অনুচ্ছেদ)। কমিশনের অন্যূন অর্ধেক সংখ্যক সদস্য এমন ব্যক্তিগণ হবেন যারা ২০ বছর বা ততোধিককাল বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় সীমানার মধ্যে সরকারের কর্মচারী ছিলেন।
১৩৯(১) অনুচ্ছেদের বিধান অনুযায়ী সরকারী কর্ম কমিশনের সভাপতি ও সদস্যগণ দায়িত্ব গ্রহণের সময় হতে ৫ বছর স্বীয় পদে বহাল থাকবেন। অবশ্য এর আগে যদি তার বা তাদের বয়স ৬২ বছর পূর্ণ হয় তবে সে সময়ে তার বা তাদের কর্ম অবসান হবে। ১৩৯(২) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে যে, সুপ্রীম কোর্টের কোন বিচারক যে পদ্ধতিতে ও কারণে অপসারিত হতে পারেন, সেরুপ পদ্ধতি ও কারণ ব্যতীত কোন সরকারী কমিশনের সভাপতি বা সদস্যকে অপসারিত করা যাবে না।
কার্যাবলী
সংবিধানের ১৪০ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে যে, প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োগদানের জন্য উপযুক্ত ব্যক্তিদেরকে মনোনয়নের উদ্দেশ্যে যাচাই ও পরীক্ষা পরিচালনা করা সরকারী কর্ম কমিশনের অন্যতম দায়িত্ব। এছাড়া রাষ্ট্রপতি কর্তৃক কোন বিষয়ে কমিশনের পরামর্শ চাওয়া হলে কিংবা কমিশনের দায়িত্ব সংক্রান্ত্র কোন বিষয় কমিশনের নিকট প্রেরণ করা হলে সে সম্পর্কে পরামর্শ দান করাও কর্ম কমিশনের একটা দায়িত্ব। এছাড়া আইন দ্বারা নির্ধারিত অন্যান্য দায়িত্বপালন।
এই অনুচ্ছেদের (২) উপ-অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট আইনের বিধানাবলী সাপেক্ষে রাষ্ট্রপতি নিম্নলিখিত ক্ষেত্রে কমিশনের সাথে পরামর্শ করবেনঃ
- প্রজাতন্ত্রের কর্মের জন্য যোগ্যতা ও নিয়োগ পদ্ধতি;
- প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োগ, পদোন্নতি, বদলি, ইত্যাদি বিষয় অনুসরণীয় নীতিসমূহ;
- অবসর ভাতার অধিকারসহ প্রজাতন্ত্রের কর্মের বিভিন্ন শর্তবলী; এবং
- প্রজাতন্ত্রের কর্মের শৃঙ্খলামূলক বিষয়াদি।
COMMENTS