সংসদীয় সার্বভৌমত্ব হলো- পার্লামেন্ট বা সংসদের কতটুকু নিরঙ্কুশ এবং সীমাহীন ক্ষমতা রয়েছে তার একটি বিবরণ। সংসদের সার্বভৌমত্ব অবিচ্ছিন্নভাবে দ...
সংসদীয় সার্বভৌমত্ব হলো- পার্লামেন্ট বা সংসদের কতটুকু নিরঙ্কুশ এবং সীমাহীন ক্ষমতা রয়েছে তার একটি বিবরণ। সংসদের সার্বভৌমত্ব অবিচ্ছিন্নভাবে দল মত নির্বিশেষে আমাদের রাজনীতিবিদদের শব্দভাণ্ডারের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় শব্দ।
সুতরাং আমাদের জাতীয় সংসদ সার্বভৌম কি না সে প্রশ্নের উত্তর নিম্নে তুলে ধরা হলো।
Is the parliament sovereign or not?
জাতীয় সংসদ সার্বভৌম কি না?
প্রকৃত অর্থে কোন সংগঠনই নিরঙ্কুশ সার্বভৌমত্বের দাবী করতে পারে না। সংসদীয় সার্বভৌমত্বের ধারণাটি ব্যাপকভাবে ব্রিটিশ সংবিধানের কেন্দ্রীয় ধারণা হিসাবে বিবেচিত হয়। ব্রিটিশ সংসদকে সার্বভৌম বলা হয়। ইংল্যান্ডের রাজা বা রাণী, লর্ডস সভা ও কমন্স সভা- এই তিন এর সমন্বয়ে গড়ে উঠা সংসদ ইংল্যান্ডের সকল বিষয়ে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান। এই সংসদকে সার্বভৌম বলা হলেও ডাইসীর মতে, এর সার্বভৌম ক্ষমতা প্রয়োগের ক্ষেত্রে দু’টি সীমাবদ্ধতা আছে-
- একটি বাহ্যিক; এবং
- অপরটি অভ্যন্তরীণ।
বাহ্যিক সীমাবদ্ধতা হচ্ছে, দেশের জনগণ। দেশের জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোন আইন প্রণয়ন করা হলে জনগণ বিদ্রোহ করতে পারে। অভ্যন্তরীণ সীমাবদ্ধতার মধ্যে রয়েছে মন্ত্রীসভা, বিচার বিভাগ, সংবাদপত্র ও জনমত, রাজনৈতিক সংগঠন ইত্যাদি।
ইংল্যান্ডের মত বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ পর্যাপ্ত ক্ষমতা ও সার্বভৌমত্বের অধিকারী নয়। জাতীয় সংসদে প্রণীত আইন রাষ্ট্রপতি অনুমোদন না করে পুনর্বিবেচনার জন্য সংসদ ফেরত পাঠাতে পারেন। এছাড়া রাষ্ট্রপতি জাতীয় সংসদ আহ্বান করতে পারেন, আবার তা ভেঙ্গে দিতেও পারেন।
আইনানুগ অবস্থান আমাদের সংবিধানে আরও স্পষ্ট যে, আমাদের সংবিধানটি তার ৭(২) অনুচ্ছেদে স্পষ্টভাবে বলেছে, এই সংবিধানটি জনগণের একচ্ছত্র প্রকাশ হিসাবে, প্রজাতন্ত্রের সর্বোচ্চ আইন এবং সংবিধানের সহিত অসামঞ্জস্য মনে হলে সংসদের প্রণীত আইনও সুপ্রীম কোর্ট বাতিল করে দিতে পারেন। কেণনা, এখানে সাংবিধানিক সার্বভৌমত্ব স্বীকৃত। এরুপ কতিপয় ক্ষেত্র ব্যতিরেকে, অন্যান্য সকল কাজে জাতীয় সংসদ স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে।
তাই বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ ব্রিটেনের সংসদের ন্যায় সার্বভৌম না হলেও নিজ ভূবনে সার্বভৌম বলা যায়।
COMMENTS