বৈবাহিক বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার সাথে সাথেই যেমন স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কিছু চুক্তিভূক্ত ও চুক্তি বহির্ভূত অধিকার ও কর্তব্যের সৃষ্টি করে। তদ্রুপভাবে...
বৈবাহিক বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার সাথে সাথেই যেমন স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কিছু চুক্তিভূক্ত ও চুক্তি বহির্ভূত অধিকার ও কর্তব্যের সৃষ্টি করে। তদ্রুপভাবে, বিবাহবিচ্ছেদের সাথে সাথেই কতিপয় আইনগত দায়বদ্ধতার উদ্ভব হয়।
সুতরাং নিম্নে আমি একটি বিবাহবিচ্ছেদে কি কি অধিকার ও কর্তব্য সৃষ্টি হয়ে থাকে তা আলোচনা করব। আশা করি আপনি উপকৃত হবেন।
What rights and obligations arise in divorce?
বিবাহবিচ্ছেদে কি কি অধিকার ও কর্তব্য জন্মায়?
স্বামী-স্ত্রী আর একসঙ্গে না থাকার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরে বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে। যে কোন পদ্ধতিতে হোক তালাক সম্পূর্ণ হলে তা পক্ষগণের উপর নিম্নলিখিত অধিকার ও কর্তব্যের সৃষ্টি করেঃ
দেন মোহর অবিলম্বে পরিশোধযোগ্য হবে
সহবাস হয়ে থাকলে স্ত্রী তাৎক্ষনিক ও বিলম্বিত মোহরানার সম্পূর্ণটা পাবে। সহবাস না হয়ে থাকলে এর অর্ধেক পাবে। দেন মোহরের পরিমাণ উল্লেখ করা না থাকলে স্ত্রী মাত্র ৩টি পোশাক উপহার পাবে। (হেদায়া, ৪৪)। ১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশও সমগ্র মোহরানার অর্থ পরিশোধযোগ্য বলে বিধান রয়েছে।
অন্য বিবাহ করার অধিকার
দাম্পত্য মিলন হয়ে থাকলে ইদ্দত পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে এবং এর পর অপর একজন স্বামী গ্রহণ করতে পারবে। দাম্পত্য মিলন না হয়ে থাকলে স্ত্রী তৎক্ষণাৎ অনত্র বিয়ে করতে পারবে।
স্বামীর ক্ষেত্রে তালাক প্রাপ্তা স্ত্রীসহ ৪ জন স্ত্রী না থেকে থাকলে সে আর একজন নারীকে বিয়ে করতে পারে। ঐ স্ত্রীসহ ৪ জন স্ত্রী থেকে থাকলে তালাকের পর স্ত্রীর ইদ্দতকাল উত্তীর্ণ হবার পর সে আর একটি স্ত্রী গ্রহণ করতে পারবে।
উত্তরাধিকারে পারস্পারিক অধিকারের অবসান ঘটবে
তালাক অপ্রত্যাহারযোগ্য হলে তালাকের সাথে সাথে পারস্পারিক উত্তরাধিকার লাভের অবসান ঘটবে, তবে স্বামাীর মৃত্যূ শয্যায় মরণ অসুখকালে তালাক ঘোষিত হলে এর ব্যতিক্রম ঘটবে এবং স্ত্রীর ইচ্ছানুযায়ী বিয়েটি ভঙ্গ না হয়ে থাকলে, ইদ্দতকাল পর্যন্ত মিরাছের অধিকার থাকবে। তালাক অপ্রত্যাহারযোগ্য না হলে তা অপ্রত্যাহারযোগ্য হবার পূর্ব পর্যন্ত একে অন্যের সম্পত্তির উত্তরাধিকার হবে।
দাম্পত্য মিলন নিষিদ্ধ
অপ্রত্যাহারযোগ্য তালাকের পর পক্ষগণের মধ্যে দাম্পত্য মিলন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ এবং এরুপ মিলনের ফলে কোন সন্তানের জন্ম হলে সে জারজ হিসেবে গণ্য হবে এবং স্বীকৃতি দ্বারা বৈধ করা যাবে না। তবে ইসলামী আইনের বিধান সাপেক্ষে তারা পুনরায় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারবেন।
পুনবিবাহ
শরীয়া আইন অনুসারে কোন স্বামী তার স্ত্রীকে ৩ তাল দিলে সেই মহিলাকে পুনরায় বিয়ে করতে হলে আগে তার ‘হিলা বিয়ে’ দিতে হবে। অর্থাৎ অপর কোন পুরুষের সাথে সেই মহিলার বিয়ে দিয়ে দাম্পত্য মিলনের পর সেই স্বামী তালাক দিলে বা উক্ত স্বামীর মৃত্যূ হলে ইদ্দত পালনের পর পূর্বের স্বামীকে পুনরায় বিয়ে করতে পারবে।
পক্ষান্তরে, ১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ অনুযায়ী তালাক দেয়ার পর হিলা বিয়ে ছাড়াই তাকে উক্ত স্বামী পুনরায় বিয়ে করতে পারবে এবং এ সুযোগ ২ বার পর্যন্ত থাকবে। তৃতীয় বার তালাক দিলে সেক্ষেত্রে হিলা বিয়ের প্রয়োজন হবে।
COMMENTS