সাধারণ কথায়, ইনডেমনিটি বা ‘ক্ষতিপূরণ’ শব্দটি আর্থিক ক্ষতির বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণ বা কাউকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করা বুঝায়। তবে চুক্তি আইনে Inde...
সাধারণ কথায়, ইনডেমনিটি বা ‘ক্ষতিপূরণ’ শব্দটি আর্থিক ক্ষতির বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণ বা কাউকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করা বুঝায়। তবে চুক্তি আইনে Indemnity এক বিশেষ অর্থে ব্যবহৃত হয়।
নিম্নে ক্ষতিপূরণ চুক্তি কাকে বলে তা বিস্তারিত আলোচনা করা হলো-
What is contract of indemnity?
ইনডেমনিটি চুক্তি বা ক্ষতিপূরণের চুক্তি কি?
বাংলাদেশ চুক্তি আইনের ১২৪ ধারায় বলা হয়েছে যে, যে চুক্তি দ্বারা এক পক্ষ অপর পক্ষকে স্বয়ং প্রতিশ্রুতিদাতার আচরণে বা অন্য কোন ব্যক্তির আচরণে উদ্ভূত ক্ষতি হতে রক্ষা করার অঙ্গীকার করেন সে চুক্তিকে ক্ষতিপূরণের চুক্তি বলে।
যে ব্যক্তি ক্ষতি পূরণের প্রতিশ্রুতি দেয় তাকে ক্ষতিপূরণের প্রতিশ্রুতিদাতা (Indemnifier) এবং যাকে প্রতিশ্রুতি দেয়া হয় তাকে ক্ষতিপূরণের প্রতিশ্রুতিগ্রহীতা (Indemnity holder) বলে।
উদাহরণঃ কোন পাওনা আদায়ের জন্য ‘ক’, ‘খ’ এর বিরুদ্ধে মামলা করলে ‘খ’ এর ক্ষতিপূরণের জন্য যদি ‘গ’ কোন অঙ্গীকার করে তবে তাকে ক্ষতিপূরণের চুক্তি বলা যাবে।
নৌ বীমা ও অগ্নি-বীমা ক্ষতিপূরণের চুক্তি। ১৯৪২ সালে গাজানান বনাম মোরেশার [Gajanan V Moreshar, (1942) Bom. 670] মামলায় বোম্বাই হাইকোর্ট অভিমত ব্যক্ত করেন যে, ১২৪ ধারায় বর্ণিত ক্ষতিপূরণের চুক্তির সংজ্ঞা সম্পূর্ণ নয়। তাই ইংল্যান্ডের আদালত যেরুপে এই নীতির প্রয়োগ করেন এদেশের আদালতেরও সেরুপে এই নীতিটি প্রয়োগ করা উচিত।
বৈশিষ্ট্য
ক্ষতিপূরণের উক্ত সংজ্ঞা বিশ্লেষণ করলে যে বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায় তা নিম্নরুপঃ
- প্রতিশ্রুতিদাতার নিজের আচরণ হতে হবে যদি প্রতিশ্রুতিগ্রহীতার কোন ক্ষতি হয়; অথবা,
- অপর কোন ব্যক্তির আচরণ হতে প্রতিশ্রুতিগ্রহীতার যদি কোন ক্ষতি হয়; তবে,
- প্রতিশ্রুতিদাতা উক্ত ক্ষতির ক্ষতিপূরণ করবেন।
ক্ষতিপূরণের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত বা অব্যক্ত হতে পারে। সেক্রেটারী অব ষ্টেট বনাম ব্যাংক অব ইন্ডিয়া [(১৯৩৮) ৬৫ আই. এ. ২৮৬ পি. সি.] মামলায় বিচারপতি হ্যালিসবারী এ অভিমত ব্যক্ত করেন যে, আইনের একটি সাধারণ নিয়ম হচ্ছে এই যে, যখন কোন ব্যক্তি অপর কোন ব্যক্তির অনুরোধে কোন কার্য সম্পাদন করেন এবং তাকে কোন অন্যায় হতে পারে এরুপ সন্দেহ পোষণ করেন না, অথচ এর ফলে তৃতীয় ব্যক্তির ক্ষতি হয়, তখন যার অনুরোধে তিনি উক্ত কার্য করেছেন তার নিকট হতে তিনি ক্ষতিপূরণ পাবার অধিকারী। এই সিদ্ধান্তে অব্যক্ত প্রতিশ্রুতির প্রতি আদালতের অনুমোদন প্রদত্ত হয়েছে।
চুক্তিতে সময় উল্লেখ করা থাকলে উক্ত সময় পর্যন্ত চুক্তিটি বলবৎ থাকবে। কোন সময়ের উল্লেখ না থাকলে যুক্তিসঙ্গত সময়ের মধ্যে চুক্তিটি পালন করতে কোন পক্ষ অবহেলা করলে এবং এর ফলে অপর পক্ষের ক্ষতি সাধিত হলে তার জন্য ক্ষতিগ্রস্ত পক্ষ ক্ষতিপূরণ পেতে পারে। তবে ক্ষতিপূরণের পরিমাণ কত হবে তা নির্ভর করে চুক্তির উপর। প্রকৃত ক্ষতির বিবেচনায় ক্ষতিপূরণ দেয়া হয়। কোনক্রমেই পরোক্ষ ক্ষতির জন্য ক্ষতিপূরণ দেয়া হয় ন বা শাস্তিমূলক ক্ষতিপূরণ আদায়যোগ্য নয়।
COMMENTS