জামিন বা (Bail) বলতে বিচারের অপেক্ষায় থাকা কোনও অভিযুক্ত ব্যক্তির অস্থায়ী মুক্তি। অর্থাৎ প্রয়োজনে আদালতে হাজির হওয়ার প্রতিশ্রুতিসহ আসামী...
জামিন বা (Bail) বলতে বিচারের অপেক্ষায় থাকা কোনও অভিযুক্ত ব্যক্তির অস্থায়ী মুক্তি। অর্থাৎ প্রয়োজনে আদালতে হাজির হওয়ার প্রতিশ্রুতিসহ আসামীদের শর্তাধীন মুক্তি। কখনও কখনও এই শর্তে যে, আদালতে তাদের উপস্থিতি গ্যারান্টি দেওয়ার জন্য মোটা অঙ্কের টাকা জমা দেওয়া হয়। জামিন মূলত দুই ধরণের। যথাঃ
- Ad interm Bail (অন্তর্বর্তীকালীন জামিন); ও
- Regular Bail (নিয়মিত জামিন)।
এছাড়াও আগাম জামিন বা Advance bail নেওয়া যায়। এক্ষেত্রে হাইকোর্ট বা উচ্চতর আদালত থেকে নেওয়া হয়ে থাকে। অনেক সময় জাজ কোর্ট থেকেও আগাম জামিন নেওয়া যায় কেণনা, জজ কোর্টেরও ক্ষমতা আছে। তবে জজ কোর্ট সাধারণত এই ক্ষমতার এক্সারসাইজ করেন না।
আপনি সহজেই কিভাবে জামিন পেতে পারেন তা নিম্নে আলোচনা করব। আশা করি আপনি উপকৃত হবেন।
How to get bail?
জামিন পাবেন কীভাবে?
জামিন নেওয়ার বিষয়টি মূলতঃ মামলার উপর নির্ভর করে। অর্থাৎ যদি আপনার মামলা থানায় হয়ে থাকে তবে বিষয়টি হবে এক ধরণের। পক্ষান্তরে, যদি মামলাটি কোর্টে হয় তবে বিষয়টি হবে আরেক ধরণের। এতদ্ভিন্ন, জামিন নেওয়ার সঙ্গে বেশ কিছু বিষয় জড়িত আছে। যেমন-
- Cognisable offences জ্ঞানীয় অপরাধ। উদাহরণস্বরূপ ধর্ষণ, খুন, অপহরণ, যৌতুকের মৃত্যু ইত্যাদি সমস্ত জ্ঞানীয় অপরাধ তার গুরুতর এবং জঘন্য প্রকৃতির কারণে অ জামিনযোগ্য।
- Non cognisable offences অ-জ্ঞানীয় অপরাধ। উদাহরণস্বরূপ আক্রমণ, প্রতারণা, জালিয়াতি, মানহানি ইত্যাদি অ-জ্ঞানীয় অপরাধগুলি সাধারণত তাদের অ গুরুতর প্রকৃতির কারণে জামিনযোগ্য।
উদাহরণ- ১
যদি আপনার বিরুদ্ধে নারী-শিশুর মামলা হয়। আর নারী-শিশুর মামলা দুই জায়গাতেই হতে পারে অর্থাৎ থানায় হতে পারে কিংবা কোর্টে। এখন যদি থানায় আপনার বিরুদ্ধে নারী-শিশুর মামলা হয় তাহলে আপনাকে ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে জামিনের জন্য আবেদন করতে হবে বা জামিন চাইতে হবে। তবে সাধারণতঃ ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে আপনাকে জামিন দিবে না। এক্ষেত্রে আপনাকে আগাম জামিন হাইকোর্টে নিতে হবে।
উদাহরণ- ২
যদি আপনার বিরুদ্ধে থানায় চুরির মামলা হয় এবং পুলিশ আপনাকে গ্রেপ্তার করে। এক্ষেত্রে আপনাকে ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে জামিন (Regular Bail) এর জন্য আবেদন করতে হবে। যদি ম্যাজিস্ট্রেট কোন কারণে আপনাকে জামিন না দেয় তাহলে আপনাকে তার উচ্চতর আদালত তথা জেলা ও দায়রা জজ কোর্ট বা সেশন কোর্টে জামিন চাইতে হবে। তবে যদি সেশন কোর্ট আপনাকে জামিন না দেয় তাহলে তার উচ্চতর কোর্টে জামিনের আবেদন করতে হবে।
মোদ্দা কথা আপনি আপনার জামিনটি দুই ধরণের আদালত থেকে নিতে পারেন। যথাঃ
- বিচারিক আদাত থেকে অর্থাৎ যে কোর্টে আপনার মামলাটি বিচার হবে; ও
- উচ্চ আদালত থেকে।
তবে, যদি আপার নামে খুনের মামলা হয় এবং এবং পুলিশ আপনাকে গ্রেপ্তার করে। তাহলে আপনার বিচারিক আদালত হবে সেশন জাজ বা দায়রা জাজ। তবে প্রথমে আপনাকে গ্রেপ্তার করে ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে হাজির করা হবে। যদিও আপনাকে জামিন দেওয়ার ক্ষমতা ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের নেই, তথাপিও আপনাকে সেই কোর্টে বেল আবেদন করতে হবে। কারণ এটাও হচ্ছে জামিনের Procedure বা প্রক্রিয়া।
সাধারণতঃ এ সব ক্ষেত্রেও জেলা ও দায়রা জাজ জামিন মঞ্জুর করতে নাও পারে। ফলে, আপনাকে আগাম জামিন জন্য হাইকোর্টে আবেদন করতে হবে।
তবে, Bailable বা জামিনযোগ্য মামলার ক্ষেত্রে ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টেই জামিন পেতে পারেন। যেমন, চেক ডিজ অর্নারের মামলা ইত্যাদি।
কোর্ট সাধারণতঃ Non-bailable বা অ-জামিনযোগ্য মামলার ক্ষেত্রে Warrant বা গ্রেপ্তারের পরওয়ানা ইস্যূ করে থাকেন। আর Bailable বা জামিনযোগ্য মামলার ক্ষেত্রে সমন (Summon) ইস্যূ করেন। যদি কোর্ট আপনাকে সমন ইস্যূ করেন, তাহলে আপনি কোর্টে গিয়ে জামিনের আবেদন করলেই আপনাকে জামিন দিয়ে দিবে।
পক্ষান্তরে, আপনার বিরুদ্ধে Warrant বা গ্রেপ্তারের পরওয়ানা ইস্যূ হলে সেই মামলায় জামিন পেতে আপনাকে কিছুটা বেগ পেতে হবে।
COMMENTS