Mens Rea হলো কোন ব্যক্তির অপরাধমূলক দায়বদ্ধতা মূল্যায়ন বা নিরুপণ করার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মানদন্ড। আর এই মতবাদটি তখন বিকশিত হয়েছিল যখন...
Mens Rea হলো কোন ব্যক্তির অপরাধমূলক দায়বদ্ধতা মূল্যায়ন বা নিরুপণ করার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মানদন্ড। আর এই মতবাদটি তখন বিকশিত হয়েছিল যখন বিচারকরা বুঝতে শুরু করেছিলেন যে, কেবল কোন কার্য প্রকৃতপক্ষে অপরাধীর দায়বদ্ধতা তৈরি করতে পারে না, যদি না আসামীর দোষীমন সাথে থাকে।
সুতরাং এ সম্পর্কে নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
What is Mens Rea in the Penal Code?
দন্ডবিধিতে Mens Rea (দুষ্টমন) কি?
Mens Rea বলতে Guilty mind বা দুষ্টমন অসদ অভিপ্রায়কে বুঝানো হয়ে থাকে। এই মতবাদ অনুযায়ী কোন অপরাধ সংঘটনের সময় অপরাধকারীর বা দোষী ব্যক্তির কোনরুপ দোষযুক্ত মন বা অভিপ্রায় না থাকে, তবে তাকে অপরাধী বা দোষী ব্যক্তি হিসেবে বিবেচনা করা হবে না। তাই, দুষ্ট মন ব্যতিরেকে কেবলমাত্র ঘটনা বা কার্য দ্বারা কোনরুপ অপরাধ সংঘটিত হয় না- যদি না অপরাধকারীর মনে অপরাধ প্রবণতা লুক্কায়িত না থাকে। তাই অপরাধ সংঘটনের জন্য সংশ্লিষ্ট কার্যটির পশ্চাতে Guilty Mind এর অস্তিত্ব থাকা প্রয়োজন।
সুতরাং, কোন অন্যায় বা নিষিদ্ধ কাজ যদি কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে সংঘটন করে কিংবা অবহেলা ক্রমে করে থাকে তবে, তাকে সে কাজের জন্য দায়ী (Liable) হতে হয়। ইচ্ছাকৃত কাজের ক্ষেত্রে ধরে নেওয়া হয় যে, অন্যায়কারীর একটি অসৎ অভিপ্রায় বা দোষী মন ছিল। অবহেলার ক্ষেত্রে ধরে নেওয়া হয় যে, সংঘটনকারী সাবধানতা অবলম্বনে আইনগত কর্তব ভঙ্গ করেছে।
উদাহরণঃ
যদি কোন ব্যক্তি আইনসঙ্গতভাবে মারতে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন পশুকে গুলি করে এবং উক্ত গুলিতে যদি ঝোপের আড়ালে লুক্কায়িত কোন ব্যক্তি নিহত হয়। তবে, উক্ত কাজের দ্বারা তাকে দোষী করা যাবে না- যদি ঐ কাজ সে অসাবধানতার বশর্বতী হয়ে না করে। এ ক্ষেত্রে তার এই কৃত কার্যকে নিছক একটি অ্যাকসিডেন্ড বা দুর্ঘটনা হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। কিন্তু সে যদি যথাযথ ও যুক্তিসঙ্গত কারণ দর্শাতে ব্যর্থ হয়, তবে তাকে হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত করা যেতে পারে।
কাজেই Mens Rea হচ্ছে একটি মানসিক উপাদান যা অপরাধ সংঘটনের জন্য আবশ্যকীয় বলে ব্রিটিশ কমন ল’য়ে সর্বদা বিবেচিত হয়েছে। তবে, Sherras Vs. De Rutzen (1890) IQ. 1918 মামলার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৩টি ক্ষেত্রে দুষ্টমন বিদ্যমান না থাকলেও অপরাধ হতে পারে। যথাঃ
- প্রকাশ্য নোংরামি (Public nuisance);
- দেওয়ানী অধিকার সম্পর্কিত মামলা (Civil rights lawsuits ); ও
- জনস্বার্থ বিরোধী কার্য (Acts opposed to public interest and welfare)।
প্রকাশ্য নোংরামীঃ যদি কোন ব্যক্তি এমন কোন কাজ করে যা প্রকাশ্য নোংরামী পর্যায়ভূক্ত হয়, তবে উক্ত কৃতকাজের পিছনে তার কোন মেনস রীয়া বা দুষ্টমন ছিল না, এই অজুহাতে সে রেহাই পাবে না; বরং তাকে অপরাধী বলে সাব্যস্ত করা হবে। তাই, Public nuisance এর ক্ষেত্রে এই মতবাদটি প্রযোজ্য নয়।
দেওয়ানী অধিকার সম্পর্কিত মামলাঃ মতবাদটি দেওয়ানী অধিকার সংক্রান্ত মামলার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।
জনস্বার্থ বিরোধী কার্যঃ যে সকল মামলা প্রকৃত অর্থে ফৌজদারী কার্যবিধির আওতায় পড়ে না অথচ জনস্বার্থ বিরোধী, সেক্ষেত্রে Mens Rea মতবাদটি প্রযোজ্য নয়। যেমন, Revenue Acts।
সর্বোপরি, মতবাদটি (Vicarious liability) বা পরার্থ দায়ের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নহে।
বাংলাদেশ দন্ডবিধিতে মেন্স রীয়ার প্রয়োগ
Bangladesh penal code বা বাংলাদেশ দন্ডবিধি আইনের অন্তর্গত অপরাধসমূহের সংজ্ঞা দেয়ার সময় সর্বত্রই “অসাধুভাবে’ (Dishonestly) এবং “প্রতারণামূলকভাবে” (Fraudulently) শব্দদ্বয় ব্যবহৃত হয়েছে। এই দুইটির একটি বিদ্যমান না থাকলে কোন অন্যায় কার্য অপরাধ বলে গণ্য হবে না। তাই, বাংলাদেশ দন্ডবিধিতে উল্লেখিত এই সকল অপরাধগুলি সংঘটনের প্রধান উপাদান হিসেবে বিবেচিত হয়। এছাড়া এরুপ অপরাধের জন্য শাস্তির বিধান রয়েছে।
এ ছাড়া, বাংলাদেশ দন্ডবিধির দ্বিতীয় পরিচ্ছেদে (Chapter II) সাধারণ ব্যাখ্যাসমূহের (General explanations) অন্তর্গত যে সকল অপরাধ বর্ণিত হয়েছে, উহা হতে স্পষ্টভাবে বুঝা যায় যে, মতবাদটি বাংলাদেশ দন্ডবিধিতে বিশেষভাবে স্বীকৃত হয়েছে।
মোট কথা, বাংলাদেশে দন্ডবিধিতে Mens Rea (দুষ্টমন) মতবাদটির সাধারণভাবে প্রয়োগ না থাকলেও প্রকারান্তরে তা বিভিন্ন নামে প্রয়োগ করা হয়।
COMMENTS