সাধারণ অর্থে আয় (Income) হলো অর্থ কিংবা সম-মানের কোন কিছু যা কোন ব্যক্তি বা ব্যবসায় মাল বা পরিষেবা সরবরাহের মাধ্যমে প্রাপ্ত হয়। তবে, আইনগত...
সাধারণ অর্থে আয় (Income) হলো অর্থ কিংবা সম-মানের কোন কিছু যা কোন ব্যক্তি বা ব্যবসায় মাল বা পরিষেবা সরবরাহের মাধ্যমে প্রাপ্ত হয়। তবে, আইনগতভাবে ‘আয়’ বলতে বাংলাদেশে প্রযোজ্য আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ এর ২(৩৪) ধারায় বর্ণিত খাতসমূহ হতে প্রাপ্ত সুবিধাকে বুঝানো হয়েছে।
নিম্নে মোট আয় ও বিশ্ব আয় সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।
What does total income and world income mean?
মোট আয় ও বিশ্ব আয় বলতে কি বুঝায়?
বিচারপতি লাউন্ডেস Commissioner of Income Tax Vs. Wallace & co মামলায় মন্তব্য করেন যে, কোন নির্দিষ্ট উৎস হতে নিয়মিতভাবে প্রাপ্ত আর্থিক সুবিধাকে আয় বলে। তবে, কোন ব্যক্তি বা ব্যবসায়ের প্রাপ্ত আয় ‘মোট আয়’ নাকি ‘বিশ্ব আয়’ তা সেই ব্যক্তি বা ব্যবসায়ের আবাসিক মর্যদার উপর ভিত্তি করে স্থির করা হয়।
সুতরাং বাংলাদেশে প্রচলিত আয়কর আইন অনুসারে মোট আয় ও বিশ্ব আয় নিম্নরুপঃ
মোট আয় (Total Income)
১৯২২ সালের আয়কর আইনের ১৭(১) ধারা অনুযায়ী কোন আয় বছরে কোন আবাসিক (Resident) নিজে অথবা তার পক্ষে অন্য কেউ কর্তৃক বাংলাদেশে যে আয় প্রাপ্ত হয়েছে বলে বিবেচিত হয় তা তার মোট আয়ের অন্তর্ভূক্ত।
১৯৮৪ সালের আয়কর অধ্যাদেশের ২(৬৫) ধারার বিধান অনুযায়ী ‘মোট আয়’ বলতে এই অধ্যাদেশের ১৭ ধারার বিধান মোতাবেক নির্ণিত আয় এবং এই অধ্যাদেশের অন্যান্য বিধান মোতাবেক যে কোন আয়ের সমষ্টিকে বুঝায়।
সুতরাং আবাসিকগণের ক্ষেত্রে ‘মোট আয়’ বলতে শুধু বাংলাদেশের আয়কে বুঝায় না বাংলাদেশের বাইরে প্রাপ্ত বা প্রাপ্য সকল প্রকার আয়ের সমষ্টিকে বুঝায়।
অনাবাসিকের ক্ষেত্রে শুধু এদেশে প্রাপ্ত বা প্রাপ্য অথবা প্রাপ্ত বা প্রাপ্য বলে বিবেচিত আয় তার ‘মোট আয়’ হিসেবে পরিগণিত হবে এবং এর উপর কর প্রদান করতে হবে। বাংলাদেশের বাইরে অর্জিত আয় তার মোট আয়ের অন্তর্ভূক্ত হবে না।
আয়কর অধ্যাদেশের ১৮ ধারার বিধান মোতাবেক নিম্নোক্ত আয়গুলি বাংলাদেশের প্রাপ্য বা উৎপন্ন না হলেও সেগুলি বাংলাদেশে প্রাপ্য বা উৎপন্ন বলে বিবেচিত হয়ঃ
(১) (ক) যে আয় বেতন খাতে করযোগ্য হয় তা যেখানেই প্রদত্ত হোক যদি তা বাংলাদেশে অর্জিত হয়। (খ) বাংলাদেশী কর্মরত নাগরিককে বাংলাদেশ সরকার অথবা স্থানীয় কর্তৃপক্ষ কর্তৃক বাংলাদেশে প্রদত্ত বেতন।
- বাংলাদেশে কোন কারবারের সাথে সম্পর্কের কারণে আয়;
- বাংলাদেশে কোন সম্পত্তি বা সম্পদ বা উৎস হতে আয়; অথবা,
বিশ্ব আয় (World Income)
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কোন ব্যক্তি যে আয় করে তার সমষ্টিকে বিশ্ব আয় বলে। বিশ্ব আয়ের কতটুকু করযোগ্য তা নির্ধারণ করতে হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির আবাসিক মর্যদা প্রথমে নির্ধারণ করতে হবে। কেণনা, আবাসিক মর্যদার উপর কর-দায় নির্ভরশীল।
কোন ব্যক্তি সংশ্লিষ্ট আয় বর্ষে যদি কমপক্ষে ১৮২ দিন বাংলাদেশে বাস করে, অথবা ঐ বছরের অব্যবহিত পূর্বের ৪ বছরের মধ্যে কমপক্ষে ৩৬৫ দিন এবং এর মধ্যে সংশ্লিষ্ট আয় বছরে মোট ৯০ দিন বাস করে তবে তাকে বাংলাদেশের আবাসিক (Resident) বলা হবে।
আবাসিক মর্যদার সহিত জাতীয়তার কোন সম্পর্ক নেই। তাই একজন বিদেশীও আবাসিক হতে পারে। কোম্পানীর ক্ষেত্রে বাংলাদেশে নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনা হয়ে থাকলে তা বাংলাদেশে আবাসিক বলে গণ্য হবে। অন্যদেরকে অনাবাসিক (Non-resident) বলে গণ্য করা হবে।
আবাসিক করদাতার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ভিতরে ও বাইরের আয় অর্থাৎ সমগ্র বিশ্ব আয় করযোগ্য হবে। কিন্তু অনাবাসিক করদাতার ক্ষেত্রে শুধু বাংলাদেশে প্রাপ্ত আয় হতে কর দিতে হবে, বৈদেশিক আয়ের উপর কোন কর প্রদান করতে হবে না।
So very helpful!
ReplyDelete