বাংলাদেশের নাগরিক হিসাবে প্রত্যেকেরই ন্যায় বিচার পাওয়ার অধিকার রয়েছে। ফলে, জামিন পাওয়া আসামীর আইনী অধিকার; তার প্রতি কোন আনুকুল্য নয়। জামিন...
বাংলাদেশের নাগরিক হিসাবে প্রত্যেকেরই ন্যায় বিচার পাওয়ার অধিকার রয়েছে। ফলে, জামিন পাওয়া আসামীর আইনী অধিকার; তার প্রতি কোন আনুকুল্য নয়। জামিন দুই ধরণের; অগ্রিম জামিন (Anticipatory bail) এবং অন্যটি অন্তর্বর্তীকালীন জামিন (Interim bail)।
নিম্নে এ বিষয়ে আলোচনা করা হলো।
Getting bail is a right of the accused
জামিন পাওয়া আসামীর অধিকার
জামিন বলতে সাধারণত কোন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার বা আটকের পরে আদালত আইন ও বিবেচনামূলক ক্ষমতা (Discretionary Power) প্রয়োগের মাধ্যমে গ্রেপ্তারকৃত বা আটককৃত ব্যক্তিকে আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী নির্দিষ্ট স্থানে এবং নির্দিষ্ট সময়ে হাজির হওয়ার শর্তে কোন জামিনদারের মুচলেকায় সাময়িক মুক্তির ব্যবস্থাকে বুঝায়।
আসামী মামলার যে কোনও পর্যায়ে জামিনের আবেদন করতে পারেন, অর্থাৎ আদালত রায় দেয়ার পূর্বে বিচারের যে কোনও পর্যায়ে আসামীর জামিন মঞ্জুর করতে পারেন। কেননা, কোনও অপরাধ প্রমাণিত হওয়ার পূর্বে কাউকে অহেতুক আটকে রাখা ন্যায়বিচারের পরিপন্থী।
তাছাড়া নিরপরাধ কোন ব্যক্তিকে আটকে রাখলে তার সামাজিক, পারিবারিক, শারীরিক ও মানসিক সমস্যার পাশাপাশি অভিযুক্তের মানবাধিকার লঙ্ঘন হতে পারে।
সুতরাং উপরোক্ত বিষয়গুলি বিবেচনা করে বাংলাদেশ ফৌজদারী কার্যবিধির ৪২৬, ৪৯৬, ৪৯৭, ৪৯৮, ৪৯৯, ৫০২ এবং ৫১৪ ধারাতে মূলত জামিনের বিধানের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
কখন আসামী জামিন পেতে পারে এবং আদালত জামিন দিতে পারেন?
ফৌজদারী কার্যবিধি, ১৮৯৮ এর বিভিন্ন ধারায় আসামীর জামিন পাওয়ার এবং বিচারকের জামিন মঞ্জুর করার বিধান রয়েছে।
১. জামিনযোগ্য অপরাধের ক্ষেত্রে-
ফৌজদারী কার্যবিধির ৪৯৬ ধারানুসারে কোনও ব্যক্তি জামিনযোগ্য অপরাধে গ্রেপ্তার বা আটক হলে, অভিযুক্ত তার অধিকার হিসাবে জামিন চাইতে পারেন। এই ক্ষেত্রে, থানার অফিসার ইনচার্জ বা আদালতে আসামীকে জামিন দিতে বাধ্য।
২. অজামিনযোগ্য অপরাধের ক্ষেত্রে-
ফৌজদারী কার্যবিধির ৪৯৭(১) অনুসারে আদালত ষোল বছরের কম বয়সী যে কোন ব্যক্তি বা এই ধরণের অপরাধে অভিযুক্ত যে কোন নারী বা যে কোন অসুস্থ কিংবা স্থবির ব্যক্তিকে জামিনে মুক্তি দেয়ার ব্যাপারে নির্দেশ দিতে পারেন।
৩. কার্যবিধির ৪৯৮ ধারামতে, আসামী আগাম জামিন পেতে পারেন।
৪. ১২০ কার্যদিবসের মধ্যে মামলার তদন্ত সমাপ্ত ন হলে ফৌজদারী কার্যবিধির ১৬৭(৫) ধারা অনুযায়ী মাজিস্ট্রেট এবং যাবজ্জীবন ও মৃত্যদন্ডের মত সাজার মামলায় দায়রা জজ আসামীর জামিন মঞ্জুর করতে পারেন।
৫. ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে ১৮০ কার্যদিবসে এবং দায়রা জজ কোর্টে ৩৬০ কার্যদিবসের মধ্যে বিচারকার্য সমাপ্ত না হলে আসামী ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৩৯(গ) ধারার অধীনে জামিন পেতে পারে।
৬. আপীল মামলা পেন্ডিং থাকাবস্থায় ফৌজদারী কার্যবিধির ৪২৬ ধারার অধীনে আসামী জামিন পেতে পারে।
সর্বোপরি বলা যায় যে, যে কোন মামলায় আসামীর জামিন মঞ্জুর করা বা না করা আদালতের Discretionary Power বা বিবেচনামূলক ক্ষমতার অন্তর্ভূক্ত।
COMMENTS