মামলা চলাকালে মৃত্যু, বিবাহ এবং পক্ষের অসচ্ছলতার ক্ষেত্রে কী ঘটে তা দেওয়ানী কার্যবিধি, ১৯০৮ এর অর্ডার ২২ এ আলোচনা করা হয়েছে। এই তিনটি ক্ষে...
মামলা চলাকালে মৃত্যু, বিবাহ এবং পক্ষের অসচ্ছলতার ক্ষেত্রে কী ঘটে তা দেওয়ানী কার্যবিধি, ১৯০৮ এর অর্ডার ২২ এ আলোচনা করা হয়েছে।
এই তিনটি ক্ষেত্রে প্রতিটির জন্য আলাদা আলাদা বিধান রয়েছে। নিম্নে বাদী বা বিবাদীর মৃত্যু হলে মামলায় কিরূপ প্রভাব ফেলে সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
If the plaintiff or defendant dies
বাদী বা বিবাদীর মৃত্যু হলে
মোকদ্দমা চলাকালে যদি বাদীর মৃত্যু হয়, তাহলে তার উকীল ঐ বিষয় দরখস্ত (বিনা কোর্ট ফী) দ্বারা জানাবেন। তারপর বাদীর মৃত্যুর তারিখ হতে ৯০ দিনের মধ্যে তার আইনমত স্থলাভিষিক্তগণ কায়েম মোকাম হবার জন্য দরখস্ত করবেন; এবং ঐরূপ দরখস্ত করলে আদালত তাদের নাম পক্ষভূক্ত করে মোকদ্দমা চালাবেন।
যদি ৯০ দিনের মধ্যে আইনমত স্থলাভিষিক্তগণ কায়েম মোকামের দরখস্ত না করেন, তাহলে মোকদ্দমা খারিজ হয়ে যাবে, এবং বিবাদী দরখস্ত করে তার সমস্ত খরচা বাদীর ত্যক্ত সম্পত্তি হতে আদায় করবার জন্য আদালতের আদেশ পাবেন। (দেওয়ানী কার্যবিধি, ১৯০৮ এর অর্ডার২২, রুল ৩)
মোকদ্দমা চলাকালে বিবাদীর মৃত্যু হলে, বাদী মৃত বিবাদীর স্থলাভিষিক্তগণকে পক্ষভুক্ত করবার জন্য দরখস্ত করবেন; এই দরখস্তে সত্যপাঠ করতে হয়। তার পর ঐ স্থলাভিষিক্তগণের উপর সমন জারী করাতে হয়।
এই দরখস্ত বিবাদীর মৃত্যুর পর ৯০ দিনের মধ্যে করতে হবে। তামাদি আইন, ১৯০৮ এর ১৭৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ৯০ দিন অতিক্রান্ত হয়ে গেলে বিবাদীর বিরুদ্ধে মোকদ্দমা খারিজ হয়ে যায়। (অর্ডার ২২, রুল ৪)
যদি অনেকগুলি বিবাদীর মধ্যে একজনের মৃত্যু হয়, তাহলে বাদী মৃত বিবাদীর স্থলাভিষিক্তগণকে পক্ষ না করে কেবলমাত্র অবশিষ্ট বিবাদীগণের বিরুদ্ধে মোকদ্দমা চালাতে পারেন।
যদি মোকদ্দমা শুনানি শেষ হবার পরে এবং রায় প্রকাশের পুর্ব্বে কোনও পক্ষের মৃত্যু হয়, তাহলে উপরোক্ত নিয়মগুলি প্রযোজ্য হবে না। সেস্থলে মৃত ব্যক্তির স্থলাভিষিক্তগণ কায়েমমোকাম না হলেও আদালত রায় প্রকাশ করতে পারবেন। কিন্তু ডিক্রীজারীর সময়ে মৃত ব্যক্তির ওয়ারিসকে পক্ষভুক্ত করতে হবে। (অর্ডার ২২, রুল ৬)
যদি মোকদ্দমা চলাকালে বাদী ইনসলভেন্ট হয়ে যান এবং তার এস্টেটের রিসিভার যদি মোকদ্দমা চালাতে অস্বীকার করেন, তাহলে মোকদ্দমা খারিজ হয়ে যাবে, এবং বিবাদী দরখস্ত করে বাদীর সম্পত্তি হতে তার নিজের খরচা আদায় করতে পারবেন। (অর্ডার ২২ রুল ৮)
উপরোক্ত কোন প্রকারে যদি মোকদ্দমা খারিজ হয়, তাহলে আর নতুন মোকদ্দমা রুজু করা চলবে না। তবে আইনমত স্থলাভিষিক্তগণ উপযুক্ত কারণ দেখিয়ে খারিজের আদেশ রহিত করে মোকদ্দমা চালাবার জন্য দরখস্ত করতে পারেন (অর্ডার ২২, রুল ৯)। এক্ষেত্রে, তামাদি আইন, ১৯০৮ এর ১৭১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ৬০ দিনের মধ্যে খারিজের আদেশ রহিত করার জন্য আবেদন করতে হবে।
এছাড়া, কোন ব্যক্তির মৃত্যু হলে মৃত ব্যক্তির প্রদত্ত ওকালতনামা রহিত হয়ে যায়; তার স্থলাভিষিক্ত ব্যক্তি উকীলকে নতুন করে ওকালতনামা দিবেন।
COMMENTS